ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ইরান আমিরাত সম্পর্ক: আঞ্চলিক সহযোগিতা বিস্তারে এর গুরুত্ব

Bangla Radio 19 views
সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শেখ তাহনুন বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান সফরে এসেছেন এবং এরইমধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রাইসি ও সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানিসহ দেশটির অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

এ সাক্ষাতে ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি বলেছেন, তার সরকারের পররাষ্ট্র নীতিতে এ অঞ্চলের প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাচ্ছে। আর এ কারণেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টিকে স্বাগত জানায় তেহরান। এ সাক্ষাতে আমিরাতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শেখ তাহনুন বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানও বলেছেন, 'আমরা এ অঞ্চলের সন্তান এবং আমাদের ভাগ্য ও ভবিষ্যত একই বন্ধনে আবদ্ধ। আর সে কারণে আমরা ইরানের সঙ্গে সর্বোচ্চ সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছি।'

আমিরাতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানির সঙ্গে সাক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ এবং শক্তিশালী দেশ হিসেবে ইরানের আঞ্চলিক অবস্থানের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করাকে সংযুক্ত আরব আমিরাত তার পররাষ্ট্র নীতিতে অগ্রাধিকার দেয়। তিনি ইরানকে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে সংযোগের প্রধান মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করেন।

২০১৬ সালে আমিরাত ও সৌদি আরবের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কে উত্তেজনা দেখা দেয়ার পর আমিরাতের কোনো পদস্থ কর্মকর্তার এটাই প্রথম তেহরান সফর। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আমিরাত সরকার তাদের পররাষ্ট্র নীতিতে ইরান এবং সিরিয়াসহ ইরানের অন্য মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বিস্তারের চেষ্টা করে আসছে। এ লক্ষ্যে আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত সপ্তাহে সিরিয়া সফর করেন এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন।

আঞ্চলিক নানান ইস্যুতে মতবিরোধ বজায় থাকলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরান ও আমিরাতের কর্মকর্তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এ থেকে সম্পর্ক উন্নয়নে দুই দেশের আগ্রহের বিষয়টি ফুটে উঠে। দু'পক্ষই চায় সম্পর্ককে এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে যাতে নতুন করে কোনো ধরনের উত্তেজনা তৈরি না হয় এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নেয়া যায়।

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ইরান ও আমিরাতের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বহুকাল ধরে এ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। এ কারণে বেশ কিছু ইস্যুতে দুদেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস এবং ইরানের ওপর কঠোর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকা সত্বেও এ অঞ্চলে আমিরাত হচ্ছে ইরানের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য শরীক দেশ।

বাইরের হস্তক্ষেপের কারণে মুসলিম বিশ্বে চলমান নিরাপত্তা সংকট অবসানের যে চেষ্টা চলছে তার কারণেও ইরান ও আমিরাতের মধ্যে সহযোগিতা বিস্তারের গুরুত্ব বেড়েছে। এ প্রসঙ্গে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানি বলেছেন, কেবলমাত্র এ অঞ্চলের দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমেই আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক স্বার্থে আর্থ-রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ইরান ও আমিরাতের মধ্যে সম্পর্ক বিস্তার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমিরাত এখন বিষয়টির গুরুত্ব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছে।# 

Add Comments