মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিজেপির সাবেক মুখপাত্র নূপুর শর্মার আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে আজ পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতা উত্তাল হয়ে উঠেছে। সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের ডাকে আজ (মঙ্গলবার) কোলকাতায় এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার মানুষ প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশে শামিল হন। এদিন দুপুর ১ টায় সমাবেশের নির্ধারিত কর্মসূচি থাকলেও বেলা ১২টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকা প্রতিবাদী জনতার ভিড়ে ভরে ওঠে। এ দিন প্রতিবাদ মিছিলটি কোলকাতার ঐতিহাসিক টিপু সুলতান মসজিদ সংলগ্ন এলাকা থেকে শুরু হয়ে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং হয়ে রাণী রাসমণিতে পৌঁছায়। এখানে এক বিক্ষোভ সমাবেশে সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তি বিজেপির সাবেক নেত্রী নূপুর শর্মার কুমন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হন। এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে গ্রেফতার দাবি করেন।
মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘আজ কোলকাতার এই বিক্ষোভ-মিছিল শেষ নয়, দিল্লি থেকে সাম্প্রদায়িকতার ঘৃণা যারা প্রচার করে জাহান্নামের নরকের পতঙ্গ নূপুর শর্মা থেকে নরেন্দ্র মোদি তাদের যতক্ষণ দিল্লির ক্ষমতা থেকে না নামানো যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই লড়াই আন্দোলন চলবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখান থেকে বার্তা দিতে চাই যে, এখানে পুলিশের অনেক হিন্দু ভাইরা আছেন, অনেক সাংবাদিক বন্ধুরা আছেন তাদের সামনে চ্যালেঞ্জের সুরে বলতে চাই, ভারত সরকারের বিদেশ দফতরের কাছে খবর নিয়ে দেখুন মুসলিম দুনিয়াতে লক্ষ লক্ষ আজকের সহনাগরিক আমাদের হিন্দু ভাইরা চাকরি করেন। আরবে যান, ইরাকে যান, কুয়েতে যান, কাতারে যান, ইন্দোনেশিয়ায় যান, মালয়েশিয়ায় যান, আফগানিস্তানে যান, লক্ষ লক্ষ ভারতীয় হিন্দু ভাইয়েরা মুসলিম দেশগুলোতে তারা চাকরি করছেন। আজ পর্যন্ত এরকম কোনও দৃষ্টান্ত নেই যে একজন ভারতীয় হিন্দু ভাইকে আরব দুনিয়া কিংবা মুসলিম কোনও দেশ থেকে হিন্দু হওয়ার কারণে তাদের চাকরি ছেড়ে দিয়ে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে, এমন কোনও নজির নেই।’
তিনি বলেন, ‘মুসলিম রাজা-বাদশাহরা এ দেশ লুঠ করতে আসেনি। বাদশাহ আওরঙ্গজেব টুপি সেলাই করে অনাড়ম্বরভাবে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। মোদিজী চা বিক্রি করতে গিয়ে ইতিহাস পড়ার সময় পাননি বলেও তীব্র কটাক্ষ করেন সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।
আজকের ওই কর্মসূচিতে সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান ছাড়াও জমিয়তে আহলে হাদিসের পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর সরদার, পীরজাদা সৈয়দ আতিফ আলী আল কাদেরী, শ্রী রামকৃষ্ণ সারদা সেবাশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী সত্যরূপানন্দ, সমাজকর্মী অনন্ত আচার্য, সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সভাপতি মাওঃ আনোয়ার হোসেন কাশেমি, বিশিষ্ট আইনজীবী মোফাক্কেরুল ইসলাম, পীরজাদা সৈয়দ তাহফিমুল ইসলাম, পীরজাদা খোবায়েব আমীন, বিশিষ্ট শিক্ষক ও সাংবাদিক আলী আকবর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন গণ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের কেন্দ্রীয়, জেলা ও ব্লক স্তরের নেতৃত্ব শামিল হন। #