ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতা অব্যাহত রয়েছে। গত সোমবার থেকে দফায় দফায় নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলে পড়ছে দখলদার।
পবিত্র লাইলাতুল কদরের রাতেও আল আকসা মসজিদের মুসল্লিদের ওপর ভয়াবহ তাণ্ডব চালানো হয়। গত কয়েক দিনে শতাধিক বিমান হামলা চালিয়ে সন্তানসম্ভবা নারী ও শিশুসহ অন্তত ৮৩ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের বিভিন্ন ভবন, পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রসহ উপত্যকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের দিন বুধবারও সেখানে ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় দখলদার বাহিনী। এদিন দফায় দফায় অঞ্চলটির বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করা হয়।
আগের দিন মঙ্গলবার বিমান হামলা চালিয়ে গাজার ৯ তলা একটি ভবন গুঁড়িয়ে দেয় ইসরায়েল। ওই ভবনটি ওষুধ কোম্পানির অফিস ও চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে নিহত ৮৩ জনের মধ্যে তিন নারী এবং ১৭ শিশুও রয়েছে। এছাড়া দখলদার বাহিনীর তাণ্ডবে আহত হয়েছে আরও ৪৮০ জন। ফিলিস্তিনিদের পাল্টা প্রতিরোধে ছয় ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। দখলদার বাহিনী বলছে, গাজা থেকে তাদের ভূখণ্ডে প্রায় দেড় হাজার রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে।
হামাস প্রধান ইসমাঈল হানিয়া বলেছেন, দখলদার বাহিনীর আগ্রাসনের মুখে যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে হামাস। ইহুদিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দলের যোদ্ধারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, দখলদার ইসরায়েল যতদিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে তার ঘৃণ্য অপরাধযজ্ঞ বন্ধ না করবে এবং পবিত্র জেরুজালেম শহর ও আল আকসা মসজিদের ওপর দখলদারিত্বের অবসান না ঘটাবে, ততদিন পর্যন্ত হামাস যোদ্ধারা প্রতিরোধ লড়াই অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষার অধিকার তাদের রয়েছে।
এদিকে হামাসের হামলার তীব্রতায় দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। মঙ্গলবার রাতে রাজধানী তেল আবিবে সাইরেন বাজিয়ে লোকজনকে ঘুম থেকে তোলা হয়। হামাসের হামলা থেকে বাঁচাতে তাদের ভূগর্ভস্থ বাংকারে পৌঁছে দেওয়া হয়।
একদিকে গাজা উপত্যকায় দখলদার বাহিনীর ভয়াবহ তাণ্ডব, অন্যদিকে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের পাল্টা প্রতিরোধকে ঘিরে পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘের আশঙ্কা, পরিস্থিতি পূর্ণাঙ্গ মাত্রার যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুই পক্ষকেই উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান জানিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।#