তুরস্কের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় জঙ্গলে ছড়িয়ে পড়া দাবানল নেভাতে ইরান দমকল বিমান পাঠিয়েছে বলে খবর দিয়েছে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। তিনি দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পরিদর্শনের জন্য মঙ্গলবার তুরস্কের আনতালিয়া প্রদেশের মানাভগাত শহরে পৌঁছে একথা জানান।
এরদোগান বলেন, “আজারবাইজন, রাশিয়া, ইউক্রেন ও সর্বশেষ ইরান থেকে অগ্নিনির্বাপক বিমান এসে পৌঁছার ফলে দাবানল নেভানোর কাজ অনেকটা সহজ হয়েছে।”
তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও ইরানের দমকল বিমানের ছবিসহ একটি টুইটার বার্তা প্রকাশ করেছে। এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তুরস্কের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ‘অ্যাক্সাজ’ নৌঘাঁটিতে ইরানের একটি ইলিউশন-৭৬ বিমান অবতরণ করেছে। তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছ, ইরানের বিমানটি একসঙ্গে ৩০ টন পানি বহন করতে পারে। এছাড়া, আঙ্কারায় নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ ফারাজমান্দ তার দেশের ইলিউশন বিমান পাঠানোর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি অগ্নিনির্বাপক হেলিকপ্টারও তুরস্কে পৌঁছেছে এবং সেগুলো রোববার (আজ) থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করবে। ইরানি রাষ্ট্রদূত বলেন, বিপদ-আপদেই এক প্রতিবেশী আরেক প্রতিবেশীর কাজে লাগে।
তুরস্কের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় জঙ্গলগুলোতে গত বুধবার থেকে অন্তত ১০০টি বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসব আগুন এরইমধ্যে বিস্তীর্ণ জঙ্গলে ছড়িয়ে পড়েছে এবং দুইজন অগ্নিনির্বাপক কর্মীসহ ছয়জন নিহত হয়েছন। বহু ঘরবাড়ি ও কৃষিক্ষেত আগুনে পুড়ে গেছে এবং হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে গেছে। দাবানলের তীব্রতা এত বেশি যে, তুরস্কের আনতালিয়া ও মারসিন প্রদেশ থেকে ধোঁয়া গ্রিস পর্যন্ত পৌঁছে গেছে যার দূরত্ব দামানলের স্থান থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার।
এরইমধ্যে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় ১৭টি প্রদেশের অন্তত ৭০টি এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতির সবচেয়ে বেশি অবনতি হয়েছে আজিয়ান সাগর উপকূলবর্তী পর্যটন নগরী মারমারিসের। সেখানকার বেশ কয়েকটি রিসোর্টে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হুমকির মুখে পড়েছে পর্যটন ব্যবসা। সরিয়ে নেওয়া হয়েছে দেশি বিদেশি বহু পর্যটক ও স্থানীয় অধিবাসীদের। দেশি-বিদেশি অগ্নিনির্বাপক পাঁচটি বিমান, ৪৫টি হেলিকপ্টার এবং ড্রোনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে এক হাজারেরও বেশি দমকলকর্মী।#