ইরান অন্যান্য বিষয়ের মতো পরমাণু ক্ষেত্রেও পিছ পা হবে না। সময়ের প্রয়োজনে এবং দেশের ভবিষ্যতের কথা ভেবে শক্তিমত্তার সাথে সামনে এগিয়ে যাবে।
গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় ইরানের বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্যদের উদ্দেশে ভাষণ দেয়ার সময় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা এ ঘোষণা দেন। সর্বোচ্চ নেতা বলেন, দেশের প্রয়োজনে পরমাণু সক্ষমতা অর্জনের ক্ষেত্রে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, আমাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ২০ এ সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং যত মাত্রা প্রয়োজন হবে তত মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা হবে।
সর্বোচ্চ নেতা বলেন পরমাণু অস্ত্রের প্রসঙ্গটি অজুহাত মাত্র। তারা চায় না এমনকি প্রচলিত সমরাস্ত্রও আমাদের কাছে থাকুক। আমাদের শক্তির উপাদানগুলো তারা ছিনিয়ে নিতে চায়।
হযরত আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন: পারমাণবিক ও রাসায়নিক অস্ত্রসহ যেসব অস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষকে গণহারে হত্যা করা যায় সেসব অস্ত্র তৈরিতে ইসলামের বিধিনিষেধ রয়েছে। সেসব বিধিনিষেধ অক্ষরে অক্ষরে পালন করব।
তিনি পারমাণবিক বোমা হামলা চালিয়ে আমেরিকা যে দুই লাখ বিশ হাজার মানুষ হত্যা করেছিল সে কথা উল্লেখ করেন। একইসঙ্গে ইয়েমেনে মজলুম মানুষের ওপর অবরোধ আরোপ করা, বাজার-ঘাট, হাসপাতাল এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর পশ্চিমাদের তৈরি জঙ্গি বিমানের সাাহয্যে হামলা চালানোর কথাও স্মরণ করিয়ে দেন।
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, নিরীহ ও বেসামরিক মানুষ হত্যা করা আমেরিকাসহ পশ্চিমাদের কাজ। ইসলামি ইরান এরকম গণহত্যাকে সমর্থন করে না। আর এ কারণেই ইরান এ ধরণের মারণাস্ত্র যেমন পরমাণু বোমা তৈরির কথা চিন্তাও করে না।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, এখানে মনে রাখতে হবে, আন্তর্জাতিক ইহুদিবাদী চক্র বারবার বলে আসছে : 'আমরা ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে দেব না'। তাদের জেনে রাখা উচিত আমরা যদি পরমাণু অস্ত্র তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিতাম তাহলে ইসরাইল কেন, তাদের পৃষ্ঠপোষক বৃহৎ শক্তিগুলোর পক্ষেও তা প্রতিহত করা সম্ভব হতো না।
বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তুলনামূলকভাবে স্বাস্থ্য ও পরিবেশবান্ধব,পরিচ্ছন্ন ও সস্তা। সে কারণে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা সময়ের দাবি। এই বিদ্যুৎ অদূর ভবিষ্যতে শক্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠবে। সুতরাং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ এখনই শুরু করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইরান পরমাণু সমঝোতার অঙ্গিকারগুলো যথাযথভাবে পালন করেছে। কিন্তু অপরপক্ষ শুধু শ্লোগানই দিয়েছে, অঙ্গিকারই করেছে,বাস্তবে কোনো পদক্ষেপই নেয় নি।#