ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, ইমাম খোমেনী (রহ.)'র ইসলামী বিপ্লব এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।
ইরানের ইসলামী বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেনী (রহ.)’র মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ (শুক্রবার) রেডিও-টিভিতে সরাসরি ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী আরও বলেছেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সাফল্যের চাবিকাঠি হচ্ছে এই দু'টি শব্দ: ইসলামী ও প্রজাতন্ত্র। হজরত ইমাম খোমেনী (রহ.) মহান ও বিশাল যে কাজটি করেছেন তাহলো ইসলামী প্রজাতন্ত্রের তত্ত্ব উদ্ভাবন করেছেন এবং তা বাস্তবায়ন করেছেন। তাঁর এই তত্ত্বের ভিত্তি হলো পবিত্র ইসলাম ধর্ম ও জনগণ সম্পর্কে গভীর জ্ঞান।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, গত এক-দুই শতাব্দীতে যেসব রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার মধ্যে আর কোনো ব্যবস্থার পতনের বিষয়ে এত বেশি পূর্বাভাস করা হয়নি যেমনটি করা হয়েছে ইরানের ইসলামী প্রজাতন্ত্রের বিষয়ে।
তিনি বলেন, ইসলামী বিপ্লবের প্রথম দিন থেকেই এর বিরোধীরা যারা এই বিপ্লবকে সহ্য করতে পারছিল না তারা বলছিল এই বিপ্লব দু'মাস, ছয় মাস বা এক বছরের বেশি স্থানীয় হবে না। এক বা দু'বছর আগে আমেরিকার একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও বলেছিলেন যে, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের বিপ্লবের ৪০তম বার্ষিকী উদযাপনের সুযোগ হবে না। কিন্তু আল্লাহর রহমতে ইমাম খোমেনীর বিপ্লব ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার পতন হয়নি বরং তা ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে। দিন দিন আরও বেশি শক্তিশালী হচ্ছে।
এই বিপ্লব সব বাধা অতিক্রম করে অনেক বড় বড় সাফল্য এনে দিয়েছে বলে সর্বোচ্চ নেতা মন্তব্য করেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আসন্ন নির্বাচনে সবাইকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রত্যেকের উচিৎ নির্বাচনে অংশগ্রহণকে নিজের ওপর অর্পিত একটি দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করা এবং নিজে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি অন্যকেও পরামর্শ দেওয়া।
একইসঙ্গে প্রার্থীদেরকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, প্রত্যেক প্রার্থীকে অবশ্যই সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান হ্রাস, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি এবং চোরাচালান ও মাত্রাতিরিক্ত আমদানি ঠেকানোর বিষয়ে নিজেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মনে করতে হবে। তাদেরকে এখন প্রতিশ্রুতিগুলো সুস্পষ্ট করতে হবে যাতে নির্বাচনে বিজয়ের পর প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করলে নজরদারির দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো জবাবদিহির সম্মুখীন করতে পারে।
১৯৮৯ সালের ৩ জুন রাতে ইমাম খোমেনী ইন্তেকাল করেন। ইমাম খোমেনীর ইন্তেকালের পর ইরানের বিশেষজ্ঞ পরিষদ আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীকে সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে নিয়োগ দেয়।
৬ জুন ইমাম খোমেনী (রহ.)’র জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় জানাজা। গিনেস রেকর্ড বুক বলছে, ইমাম খোমেনী (রহ.)'র জানাজায় এক কোটি দুই লাখ মানুষ অংশ নিয়েছিল।#