ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, শত্রুরা তাঁর দেশের নির্বাচনে জনগণের উপস্থিতি কমিয়ে দিয়ে ইরানকে সন্ত্রাসবাদের লালনভূমিতে পরিনত করতে চায়। কিন্তু ইরানি জনগণ সে ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না। ইরানের ত্রয়োদশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ভাষণে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, সকল ক্ষেত্রে ইরানের ভবিষ্যত আগামী শুক্রবারের নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের ওপর নির্ভর করছে। নিজেদের হাতে দেশের ভাগ্য গঠন করার সুযোগ পাচ্ছে দেশের জনগণ। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সর্বোচ্চ মাত্রায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে।
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, মার্কিন ও ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো আগে থেকেই এ নির্বাচনে জনগণের উপস্থিতিতে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা শুরু করেছে। এমনকি তারা এ নির্বাচনে জনগণকে ভোটদানে নিরুৎসাহিত করার ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশ্বের আর কোনো দেশ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না যে দেশের নির্বাচন নিয়ে এত বেশি ষড়যন্ত্র হয়। কিন্তু এতসব ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত ইরানের সবগুলো নির্বাচনে ভোটাররা ব্যাপক মাত্রায় তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, শত্রুরা আসলে এদেশের নির্বাচনে জনগণের উপস্থিতি কমিয়ে দিয়ে ইরানকে সন্ত্রাসবাদের লালনভূমিতে পরিনত করতে চায়। কিন্তু ইরানি জনগণ সে ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না।
সর্বোচ্চ নেতা তার ভাষণে বলেন, ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামি শাসব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার যে গণভোটে দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ ভোটার ভোট দিয়েছিলেন সেই নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে শত্রুরা। তাদের সেই যে শত্রুতা শুরু হয়েছে তা আজও শেষ হয়নি।
তিনি বলেন, বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, এই একবিংশ শতাব্দিতে এখনো বিশ্বের বহু দেশে কবিলা-ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা চালু রয়েছে। এসব দেশের জনগণ নির্বাচন কাকে বলে তা জানেই না। এমন সব দেশের শাসকরাও ইরানের গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, এটা ঠিক যে, সরকারগুলো দেশের জনগণের জীবন, জীবিকা ও বাসস্থানের সমস্যার পুরোপুরি সমাধান করতে পারেনি। জনগণ অর্থনৈতিক সমস্যায় কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, নির্বাচন বয়কট করলে এ সমস্যার সমাধান হবে। বরং, ভোট কেন্দ্রগুলোতে উপস্থিত হয়ে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেই জনগণ তাদের সমস্যার সমাধানে সরকারকে সহযোগিতা করতে পারে।
ইরানি জনগণ যখনই কোনো কাজে হাত দিয়েছে তাতে সফল হয়েছে। আমি আশা করব এবারের নির্বাচনেও ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করে তারা আরেকটি বীরত্বগাঁথা তৈরি করবে।
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী তাঁর ভাষণের শেষাংশে করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির দিক দিয়ে ইরানের সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, যেসব দেশ প্রথম টিকা তৈরি করেছে তারা এই টিকা নিয়ে একচেটিয়া ব্যবসা শুরু করে। কিন্তু ইরান বিদেশি টিকার জন্য বসে থাকেনি। এখন বিশ্বের যে ৬/৭টি দেশ করোনাভাইরাসের টিকা তৈরি করছে সেগুলোর মধ্যে ইরান অন্যতম। তিনি পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে ইরানি বিজ্ঞানীদের সাফল্যের প্রশংসা করেন।
আগামী শুক্রবার (১৮ জুন) ইরানের ত্রয়োদশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনে সাতজন প্রার্থী থাকলেও এরইমধ্যে দু'জন প্রার্থী স্বেচ্ছায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।#