দীর্ঘ ২২ বছর পরে ২০ দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে খেলাফত মজলিস। সেইসঙ্গে সব রাজনৈতিক জোটের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের কথা জানানো হয়েছে। আজ শুক্রবার রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের আমির মোহাম্মদ ইসহাক এ ঘোষণা দেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, খেলাফত মজলিস একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতির প্রয়োজনে সর্বদা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-সংগ্রামে খেলাফত মজলিস বিশ্বাসী। একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন হিসেবে দীর্ঘ ৩ দশকেরও বেশি সময় রাজনৈতিক অঙ্গনে দেশ, জাতি, ইসলাম ও জনগণের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে। খেলাফত মজলিস মনে করে, দেশের প্রতিটি নাগরিকের রাজনৈতিক মতাদর্শ লালন-পালন করার অধিকার আছে। যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানেও স্বীকৃত। একটি সক্রিয় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে খেলাফত মজলিসের রাজনৈতিক কর্ম-কৌশল সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় সময়ে সময়ে পর্যালোচনা করে, দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে।
মোহাম্মদ ইসহাক আরও বলেন, বিগত ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত মজলিসে শূরার অধিবেশনে ২০ দলীয় জোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়, পরবর্তী সিদ্ধান্তের আগে পর্যন্ত খেলাফত মজলিস জোটের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ না করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। সে অনুযায়ী, দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আসছে খেলাফত মজলিস।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক জোট ইস্যু কেন্দ্রিক গঠিত হয়। জোট কোনো স্থায়ী বিষয় নয়। খেলাফত মজলিস ২০ দলীয় জোটে দীর্ঘ ২২ বছর যাবত আছে। ২০১৯ সাল থেকে ২০ দলীয় জোটের দৃশ্যমান রাজনৈতিক তৎপরতা ও কর্মসূচি নেই। ২০১৮ সালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মধ্য দিয়ে ২০ দলীয় জোটকে কার্যত রাজনৈতিকভাবে অকার্যকরও করা হয়। এমতাবস্থায় আদর্শিক, সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ২০১৯ সালের মজলিসে শূরায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খেলাফত মজলিস আজকের মজলিসে শূরার অধিবেশনে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, খেলাফত মজলিস একটি আদর্শিক রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে স্বকীয়-স্বাতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে ময়দানে ভূমিকা রাখবে এবং এখন থেকে ২০ দলীয় জোটসহ সব রাজনৈতিক জোটের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত উলামায়ে কেরাম ও রাজনৈতিক নেতাদেরও মুক্তি দাবি করা হয়।
এদিকে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'সরকারের চাপেই খেলাফত মজলিস বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছেড়েছে। আমরা মনে করি, সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে অনৈক্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে, এটা তারই অংশ।’#